ভারতবর্ষে বৃটিশ সরকার ফার্সি ভাষার পরিবর্তে ইংরেজি রাষ্ট্রভাষা করার পর ভারতীয় মুসলমানরা ইংরেজি বর্জন করে। ফলে ভারতীয় মুসলমানরা অচিরেই শিক্ষাহীন অবস্থায় ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। স্যার সৈয়দ আহম্মদ খান ভারতীয় মুসলমানগণকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য অগ্রসর হন। তিনি বহু সংগ্রামের পর মুসলমানগণকে ইংরেজি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করেন এবং আলিগড়ে ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন। সে ইতিহাস সবারই জানা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুসলমানরাও শিক্ষাহীন অবস্থায় ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। স্যার সৈয়দ আহম্মদ খানের পথ অনুসরণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কয়েকজন মুসলিম কৃতি পুরুষ ও সমাজ সেবক শহরে একটি ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। তাঁরা হলেন – মরহুম মুন্সী আব্দুল কাদির, মরহুম আব্বাস খাঁ, মরহুম সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, মরহুম খান বাহাদুর আবদুর রউফ এবং মরহুম খান সাহেব আনসর আলী মোক্তার।
১৯১০ সনের ৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পূর্ব পার্শে একটি খালি জায়গায় জর্জ মাইনর স্কুল (জর্জ এম. ই. স্কুল) প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে উল্লেখ্য, ইংরেজ রাজত্বকালে সরাসরি হাই স্কুল করা যেত না। প্রথমে মাইনর স্কুল পরে এটি উন্নীত হয়ে হতো হাই স্কুল। অল্প দিনের মধ্যে যথেষ্ট ছাত্র বৃদ্ধি হওয়ায় স্কুলটিকে সরিয়ে মোড়াইল অঞ্চলে (বর্তমান অবস্থানে) নিয়ে আসা হয়। এটি ১৯১৪ সালে জর্জ হাই ইংলিশ স্কুলে উন্নীত হয় এবং ১৯১৯ সনে কলকাতা ইউনিভার্সিটির স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে। অচিরেই হিন্দু – মুসলিম ছাত্রে স্কুলটি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে উচ্চ মানের শিক্ষক মন্ডলীর জন্যে।